শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

জমি ক্রয় সংক্রান্ত নিয়মাবলী

আমরা অনেকেই জমি কেনার সময় নানা রকম ভুল করে ফেলি ফলে অনেক আইনি জটিলতায় জড়িয়ে যাই। বর্তমানে এটা সবার জানা প্রয়োজন যে জমি ক্রয় করার সময় কিছু বিবেচ্য বিষয় সতর্কতার সাথে খেয়াল করতে হবে। অনেকেই না জেনে জমি কিনে বিপদে পড়েছেন এইরকম আমি বেশ কিছু মামলা মোকদ্দমা করছি। তাই আমি মূল বিষয় গুলি তুলে ধরলাম।
১) জরিপের মাধ্যমে প্রণীত রেকর্ড অর্থাৎ খতিয়ান ও নকশা যাচাই করতে হবে।
২) জমির তফসিল অর্থাৎ জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর উক্ত দাগে জমির মোট পরিমাণ জানতে হবে।
৩) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সি,এস; এস,এ; আর,এস পর্চা দেখাতে হবে।
৪) বিক্রেতা ক্রয় সুত্রে ভূমির মালিক হয়ে থাকলে তার ক্রয়ের দলিল/ভায়া দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা নিশ্চিত হতে হবে।
৫) বিক্রেতা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান বিক্রেতা বা তিনি যার মাধ্যমে প্রাপ্ত তার নামে অস্তিত্ব (যোগসুত্র) মিলিয়ে দেখতে হবে।
৬) জরিপ চলমান এলাকায় বিক্রেতার নিকট রক্ষিত মাঠ পর্চা যাচাই করে দেখতে হবে। যদি মাঠ পরচার মন্তব্য কলামে কিছু লেখা থাকে যেমন: মন্তব্য কলামে (AD) এভাবে লেখা থাকলে বুঝতে হবে অত্র খতিয়ানের বিরুদ্ধে তসধিক পর্যায়ে আপত্তি আছে। এরূপ জমি ক্রয়ের আগে জরিপ অফিস / ক্যাম্পে গিয়ে উক্ত জমিটির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিতে হবে।
৭) উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রেতার শরীকদের সঙ্গে বিক্রেতার সম্পত্তি ভাগাভাগির বণ্টন নামা (ফারায়েজ) দেখে নিতে হবে।
৮) বিক্রেতার নিকট থেকে সংগ্রহিন দলিল, খতিয়ান / পর্চা ইত্যাদি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে তলবকারি /স্বত্বলিপি রেজিস্টারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে।
৯) সর্বশেষ নামজারি পর্চা ডি, সি, আর খাজনা দাখিল (রসিদ) যাচাই করে দেখতে হবে। জমির খাজনা বকেয়া থাকলে এবং বকেয়া খাজনাসহ জমি ক্রয় করলে বকেয়া খাজনা পরিশোধের দায় ক্রেতার।
১০) বিবেচ্য জমিটি সার্টিফিকেট মোকদ্দমা ভুক্ত কি না, কখনও নিলাম হয়েছে কি না তা তফসিল অফিস / উপজেলা ভূমি অফিস হতে জেনে নিতে হবে। সার্টিফিকেট মামলা ভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয় যোগ্য নয় ( সরকারি দাবি আদায় আইন ১৯১৩ এর ৭ ধারা )
১১) বিবেচ্য ভূমি খাস, পরিত্যক্ত / অর্পিত (ভি পি) , অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের জন্যে নোটিশকৃত কি না তা তফসিল, উপজেলা ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল এ শাখা থেকে জেনে নিতে হবে।
১২) বিবেচ্য ভূমি কোনো আদালতে মামলা মোকদ্দমা ভুক্ত কি না তা জেনে নিতে হবে। মামলা ভুক্ত জমি কেনা উচিত নয়।
১৩) বিবেচ্য জমিটি সরেজমিনে যাচাই করে এর অবস্থান নক্শার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে এবং দখল সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে বিক্রেতার মালিকানা ও দখল নিশ্চিত হতে হবে।
১৪) সব রেজিস্টারের অফিসে তল্লাশি দিয়ে জমির সর্বশেষ বেচা কেনার তথ্য জেনে নেয়া যেতে পারে।
১৫) প্রস্তাবিত জমিটি ঋণের দায়ে কোন ব্যাংক / সংস্থার নিকট দায়বদ্ধ কি না।
১৬) প্রস্তাবিত জমিতে যাতায়াতের রাস্তা আছে কি না তাও দেখা প্রয়োজন।




এই বিষয়ে আর কোন  পরামর্শের জন্য ফোন করুন এই নম্বরে-  01677-125666

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন